দেশজুড়ে চলমান সড়ক যোগাযোগে ফের দেখা দিয়েছে তীব্র পরিবহন সংকট। বিশেষ করে মহাসড়কগুলোতে দূরপাল্লার বাস ও অন্যান্য যানবাহনের সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। ঈদ ও অন্যান্য বড় উৎসব না থাকলেও হঠাৎ করেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যা জনমনে প্রশ্ন ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা যাত্রীদের অভিযোগ, নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই তারা বাস টার্মিনালে উপস্থিত হলেও যথাসময়ে বাস পাচ্ছেন না। আবার যারা বাস পাচ্ছেন, তাদের অধিকাংশই অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে বাধ্য হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও অনেককে বাসে উঠতে না পেরে ফিরে যেতে হয়েছে।
ঢাকার গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনালে ঘুরে দেখা গেছে, পরিবহনের তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা অনেক বেশি। অনেক বাস চলাচল করলেও নির্ধারিত সংখ্যার তুলনায় তা অপ্রতুল। যাত্রীদের কেউ কেউ বলছেন, পরিবহন মালিকরা ইচ্ছাকৃতভাবে গাড়ির সংখ্যা কমিয়ে সংকট তৈরি করছেন যাতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যায়। অন্যদিকে বাস চালক ও হেলপাররা দাবি করছেন, যানজটে সময়মতো ফেরত না আসায় গাড়ি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং অতিরিক্ত ফিটনেসবিহীন বাস যেন সড়কে না নামে তা নিশ্চিত করতে অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে তারা স্বীকার করেছেন যে, হঠাৎ যাত্রীচাপ বেড়ে যাওয়ায় কিছু এলাকায় পরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, চালকের সংকট, তেল ও যন্ত্রাংশের মূল্যবৃদ্ধি এবং সড়ক সংস্কারজনিত সমস্যার কারণে পরিবহন মালিকরা অনেক ক্ষেত্রে গাড়ি কম চালাচ্ছেন। এর ফলে যাত্রীসাধারণকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সাধারণ মানুষ বলছেন, প্রতিদিনের জীবনে এমন ভোগান্তি মেনে নেওয়া কঠিন। বিশেষ করে চাকরিজীবী ও শিক্ষার্থীরা এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এ অবস্থায় দ্রুত সমাধান চেয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তারা আশা করছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, যাতে সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে যাতায়াত করতে পারে।