খালেদা জিয়াকে তার প্রিয় ফল ‘কালো মানিক’ তরমুজ উপহার দিতে গ্রামের এক নিরহ কৃষক এখন ঢাকার পথে। ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও আবেগে পূর্ণ এই যাত্রাটি ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ঘটনাটি যেন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক মানবিক আবেগের দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।
কৃষকটির নাম আব্দুল হাকিম, বয়স আনুমানিক ৫৫ বছর। পেশায় একজন ছোটখাটো কৃষক হলেও মনে তিনি খালেদা জিয়ার একনিষ্ঠ সমর্থক। চট্টগ্রামের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে তাঁর বসবাস। এবছর তিনি নিজ হাতে চাষ করেছেন খ্যাতনামা জাতের ‘কালো মানিক’ তরমুজ, যার স্বাদ, রঙ ও গন্ধে রয়েছে বিশেষ আকর্ষণ। খালেদা জিয়ার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা থেকেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, এই প্রথম ফলন থেকে নিজের হাতের সেরা একটি তরমুজ উপহার দেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে।
তরমুজটি একটি বিশেষ বাঁশের ঝুড়িতে করে অত্যন্ত যত্নসহকারে ঢাকা নিয়ে যাচ্ছেন হাকিম। গায়ে পরেছেন সাদা পাঞ্জাবি, মাথায় গামছা বাঁধা—একেবারে একজন সাধারণ কৃষকের প্রতিচ্ছবি। পথে পথে মানুষ তাকে ঘিরে ভিডিও তুলছে, কেউ সেলফি নিচ্ছে, কেউ উৎসাহ দিচ্ছে। তার এই যাত্রা যেন গ্রামের মাটির ঘ্রাণ ছড়িয়ে দিচ্ছে রাজধানীর পথে।
হাকিম বলেন, “আমি কোনো রাজনীতিক না। আমি একজন সাধারণ মানুষ। কিন্তু আপা (খালেদা জিয়া) অনেক কষ্ট করছেন, জেল খেটেছেন, এখনো অসুস্থ। তাঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধা অগাধ। আমার চাষ করা এই ‘কালো মানিক’ যেন তাঁর মুখে একটু হাসি ফোটায়, সেটাই আমার চাওয়া।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই দৃশ্য ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে। অনেকেই আব্দুল হাকিমের মানবিকতা, নিষ্কলুষ আবেগ ও ভালোবাসাকে স্বাগত জানিয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, এই ঘটনাই প্রমাণ করে রাজনীতি শুধু নেতার কথা নয়, অনুসারীর আবেগেরও প্রতিফলন।
খালেদা জিয়ার দল বিএনপির অনেক নেতাও হাকিমের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। তবে এখনো জানা যায়নি, হাকিমের এই ‘কালো মানিক’ খালেদা জিয়ার হাতে পৌঁছাবে কি না।
যাত্রাপথে হাকিম গণমাধ্যমকে বলেন, “আমি কারও কাছে কিছু চাই না। শুধু চাই আমার আপার কাছে পৌঁছাই আর তাঁর হাতে দেই এই উপহার। আমি তৃপ্ত থাকব। এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন হবে।”
এই কৃষকের সহজ-সরল ভালবাসা আবারও প্রমাণ করে, রাজনীতির বাইরেও এক ধরনের নিঃস্বার্থ মানবিকতা কাজ করে, যা মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেয় সহজেই।