আরাফার দিন দোয়া করার উত্তম সময়, যে দোয়া পড়তে ভুলবেন না…
ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য আরাফার দিন (৯ই জিলহজ) একটি বিশেষ ফজিলতপূর্ণ ও মর্যাদাসম্পন্ন দিন। হজের মূল রোকন 'ওকুফে আরাফা' এই দিনে সম্পন্ন হয়, যা হজের অন্তর্ভুক্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা। এই দিনটিকে ‘হজের দিন’ বলা হয় এবং এ দিনটিতে রোজা রাখা ও দোয়া করা অত্যন্ত ফজিলতের কাজ বলে গণ্য করা হয়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আরাফার দিনের দোয়া, সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া। আমি এবং আমার পূর্ববর্তী নবীগণ আরাফার দিনে যে দোয়া করেছি, তা হলো— ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ও হুয়া আলা কুল্লি শাইইন কাদির।’ (তিরমিজি)
এই দোয়াটি পড়লে আল্লাহর একত্ব, তাঁর সর্বশক্তিমান হওয়া এবং সর্বশ্রেষ্ঠ মালিক ও প্রশংসার যোগ্য—এই সবগুলো গুণের স্বীকৃতি দেয়া হয়, যা মুসলমানের ঈমানকে মজবুত করে এবং আল্লাহর রহমত পাওয়ার জন্য উপযুক্ত করে তোলে।
আরাফার দিনে দোয়া করার শ্রেষ্ঠ সময় কখন?
হাদিস ও ইসলামি স্কলারদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, আরাফার দিন সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময় দোয়া করার জন্য সবচেয়ে উত্তম সময়। বিশেষ করে যারা হজে অবস্থান করছেন, তাদের জন্য আরাফাত ময়দানে অবস্থানকালীন সময়ে দোয়া করা সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য। তবে যারা হজে নেই, তাদের জন্যও এই দিনটি অনেক ফজিলতপূর্ণ।
যে দোয়াগুলো এই দিনে পড়া সুন্নত ও বরকতময়:
১. তাওহিদের দোয়া:
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু…”
২. ইস্তিগফার ও তওবা:
“আস্তাগফিরুল্লাহ রব্বি মিন কুল্লি জাম্বিন।”
৩. দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ চাওয়া:
“রব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাহ ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাহ, ওয়াকিনা আজাবান্নার।”
৪. ব্যক্তিগত ও পরিবারিক দোয়া:
নিজের পাপ মোচন, পরিবার-পরিজনের শান্তি, রিজিক বৃদ্ধি ও মৃত্যুর পর জান্নাত লাভের জন্য দোয়া করা উচিত।
রোজা রাখার ফজিলত
যারা হজে যাননি, তাদের জন্য এই দিনে রোজা রাখা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। এক হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন, “আমি আশা করি, আরাফার দিনের রোজা আগের এক বছর ও পরের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেয়।” (সহীহ মুসলিম)
এই দিনটি আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় দিনগুলোর একটি। তাই আরাফার দিনকে হালকাভাবে না নিয়ে বেশি বেশি ইবাদত, দোয়া ও জিকিরের মাধ্যমে তা পূর্ণতা দেয়া উচিত। আমাদের সকলের উচিত এই দিনটিকে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করা এবং দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ কামনায় নিজেকে নিয়োজিত রাখা।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই পবিত্র দিনে অধিক দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।