ঢাকা: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের এক প্রভাবশালী নেতা মো. তৌফিক হোসেনকে পালিয়ে যাওয়ার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শনিবার ভোরে দুবাইগামী একটি ফ্লাইট ধরার চেষ্টা করার সময় তাকে আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেছে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।
জানা গেছে, সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও ধানমণ্ডি এলাকায় একাধিক চাঁদাবাজি ও জমি দখলের ঘটনায় তৌফিকের নাম উঠে আসে। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে সরকারি জায়গা দখল, অবৈধ অর্থ উপার্জন, এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গোয়েন্দা সংস্থা বেশ কিছুদিন ধরেই তাকে নজরদারিতে রেখেছিল।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, তৌফিক পাসপোর্টে ভিন্ন নাম ব্যবহার করে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছিলেন। সন্দেহজনক আচরণ ও আগেভাগে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাহিনী তৎপর হয়ে তাকে চেকইন কাউন্টারে চিহ্নিত করে। পরে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং নিশ্চিত হওয়া যায়, সে-ই যুবলীগ নেতা তৌফিক।
আর্মড পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, “তৌফিকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন, যা স্পষ্টতই সন্দেহজনক। আমরা তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করেছি।”
তৌফিকের গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সংগঠন কোনো অপরাধীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। কেউ সংগঠনের নাম ব্যবহার করে অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই গ্রেপ্তার সাম্প্রতিক সময়ে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের প্রতিফলন। জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনকে অপরাধমুক্ত রাখতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই গ্রেপ্তার নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে তৌফিকের আগের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে আরও তদন্ত ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃত তৌফিক বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার প্রস্তুতি চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, আরও কেউ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।