আরব সাগরের উত্তাল জলে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি ভারতের নৌবাহিনী পাকিস্তানি একটি সামরিক ঘাঁটির ওপর লক্ষ্য করে সুনির্দিষ্ট হা'ম'লা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা সূত্রের দাবি, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত ওই ঘাঁটি থেকে সম্প্রতি বেশ কিছু উ'স্কানিমূলক তৎপরতা চালানো হচ্ছিল, যার প্রতিক্রিয়ায় এই হা'ম'লা চালানো হয়।
হা'ম'লার আগে ভারতীয় নৌবাহিনী নাকি স্যাটেলাইট চিত্র ও গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে নিশ্চিত হয় যে, ওই ঘাঁটিতে সন্ত্রা'সবাদী কর্মকাণ্ড ও অস্ত্র সঞ্চয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। ভারতীয় এক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা জানান, “জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় যে কোনো পদক্ষেপ নিতে আমরা প্রস্তুত। আমাদের সীমান্ত ও সমুদ্রসীমায় উ'স্কানি মেনে নেওয়া হবে না।”
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, ভারত বিনা উ'স্কানিতে এ ধরনের সামরিক তৎপরতা চালিয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে। পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্র বলেন, “আমরা শান্তি চাই, তবে জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমরা কোনো আপস করব না।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হা'ম'লার ফলে আরব সাগরের পরিস্থিতি বেশ জটিল হয়ে উঠেছে। আগে থেকেই সমুদ্রপথে চোরাচালান, জা'ঙ্গি কার্যকলাপ ও মি'ছাইল উৎক্ষেপণ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সন্দেহ ছিল। এই নতুন হা'ম'লা সেই অবিশ্বাসকে আরও তীব্র করে তুলছে। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পরিস্থিতি শান্ত করতে উভয় দেশের কূটনৈতিক মহলে দ্রুত আলোচনা শুরু হওয়া জরুরি।
এদিকে ভারতের জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। একপক্ষে অনেকে এই পদক্ষেপকে সাহসী ও প্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন, অন্যদিকে আরেকপক্ষে যুদ্ধের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে বাণিজ্যিক নৌপরিবহন ও জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, কারণ তারা আরব সাগরে প্রতিদিন চলাচল করে থাকে।
আন্তর্জাতিক মহলও পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনসহ বিভিন্ন শক্তিধর রাষ্ট্র ইতিমধ্যেই উভয় দেশকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সরাসরি সংঘাত গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
সবশেষ খবর অনুযায়ী, ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও কিছু সামরিক সরঞ্জাম আরব সাগর অঞ্চলে মোতায়েন করেছে, তবে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের কোনো প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে না বলেই তাদের দাবি। পাকিস্তানও সীমান্তবর্তী এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে দুই দেশের মধ্যে দ্রুত সংলাপ শুরু না হলে আরব সাগরের উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।