ড. ইউনুসের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে অনেকেই বলছেন, এই সময় বাংলাদেশ যে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে, তা থেকে উত্তরণে কেবল নীতির পরিবর্তন নয়, প্রয়োজন মূল দৃষ্টিভঙ্গির রূপান্তর। তবে বাস্তবতার মাটিতে দাঁড়িয়ে এই "চিন্তার কাঠামো বদলানো" কতটা সম্ভব—এ নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।
বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ড. রিজওয়ান সাদিক বলেন,
"চিন্তার কাঠামো বদল মানে শুধু নতুন কিছু ভাবা নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিশ্বাস, মানসিকতা ও আচরণগত শেকড় উপড়ে ফেলা। এটি একটি ধীরে চলা প্রক্রিয়া, যা শিক্ষা, সংস্কৃতি ও নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে তৈরি হয়।"
অন্যদিকে অর্থনীতিবিদ ড. মাহমুদ কামাল বলেন,
"বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে ‘চাকরি মানেই সাফল্য’ এই চিন্তা বহাল আছে। ড. ইউনুস যে উদ্ভাবনী ও উদ্যোগ-ভিত্তিক মানসিকতার কথা বলেন, তা বাস্তবায়ন করতে গেলে শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল সংস্কার দরকার। শুধুমাত্র বক্তব্যে কাজ হবে না, চাই কাঠামোগত উদ্যোগ।"
তবে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কিছুটা হলেও এই পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। ইউটিউবার ও উদ্যোক্তা তানভীর হোসেন বলেন,
"আমরা চাই ভিন্ন কিছু করতে। ইউনুস স্যার যা বলেছেন, সেটি আমাদের ভাবায়। কিন্তু পরিবার ও সমাজের চাপ অনেক সময় আমাদের পুরোনো চিন্তার ফ্রেমে আটকে রাখে।"
এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চিন্তার কাঠামো বদল কেবল ব্যক্তি পর্যায়ে নয়, রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও প্রয়োজন।
"যেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় দলীয় লাভ-ক্ষতি বিবেচনায়, সেখানে ‘গণমুখী চিন্তা’ আনাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ," — মন্তব্য করেন অধ্যাপক রুবায়েত জাহান।
ড. ইউনুসের এই বক্তব্য কিছু মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছে আবার কিছু মানুষ এটিকে ‘আদর্শবাদী’ বলে উপেক্ষা করছেন। তবে একটি কথা স্পষ্ট—এই বক্তব্যটি মানুষকে ভাবতে বাধ্য করেছে, আর সেটাই হয়তো পরিবর্তনের প্রথম ধাপ।