ভারতের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলল পাকিস্তান

0


 সম্প্রতি পাকিস্তান ভারতের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক পরিসরে আলোচনার সূত্রপাত করেছে। ইসলামাবাদ দাবি করেছে, দিল্লির হাতে থাকা বিপুল পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার সঠিকভাবে সুরক্ষিত না থাকলে তা দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। পাকিস্তান সরকার জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছে, পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার বা দুর্ঘটনার সম্ভাবনা ঠেকাতে ভারতের উচিত সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।


পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, "পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে ভারতের দায়িত্ব আরও বেশি। তাদের উচিত স্বচ্ছতা বজায় রেখে নিজেদের অস্ত্রভাণ্ডারের নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী নিশ্চিত করা।" তারা আরও দাবি করে যে, ভারতের ভেতরে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা এবং সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সামরিক প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তার ঘাটতি উদ্বেগজনক।


এই বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুন মেনেই পরিচালিত হয়। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, "আমাদের পরমাণু অস্ত্র ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন। যারা এই বিষয়ে প্রশ্ন তোলে, তারা আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে।"


বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের এই পদক্ষেপ কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করার একটি কৌশল হতে পারে। বিশেষ করে যখন দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে, তখন এ ধরনের অভিযোগ দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে।


অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে। জাতিসংঘের পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণবিষয়ক সংস্থাগুলোর মতে, যেকোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশের দায়িত্ব হচ্ছে সর্বদা নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর আস্থার পরিবেশ গড়ে তোলা।


পর্যবেক্ষকদের মতে, পারমাণবিক অস্ত্রের নিরাপত্তা শুধু জাতীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়, এটি একটি বৈশ্বিক ইস্যু। তাই পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে আলোচনা শুরু হলে তা গোটা অঞ্চলের জন্য উপকারী হবে। তবে ভবিষ্যতে এই ইস্যু নিয়ে দুই দেশের মধ্যে নতুন কোনো উত্তেজনা তৈরি হয় কিনা, তা সময়ই বলে দেবে।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top