জানা গেছে, বিয়েটি হয়েছে দেশের উত্তরাঞ্চলের একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে। বর একজন উচ্চশিক্ষিত এবং বিদেশে ব্যবসা পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত। কনে একজন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থী। দুই পরিবারই অর্থ-সম্পদে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তবে এই বিয়েতে সম্পদের মহড়া দিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে কনের পরিবার।
বিয়ের দিন সকালে কনের বাড়িতে বরযাত্রা পৌঁছানোর পর শুরু হয় নানা আয়োজন। অন্যান্য বিয়ের মতোই চলছিল গান-বাজনা, নাচ ও ভোজ। কিন্তু সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে যখন বরপক্ষকে উপহার দেওয়া হয় ৪ বস্তা টাকা, প্রতিটি বস্তায় প্রায় ৫০ লাখ টাকা করে নগদ অর্থ! অর্থাৎ মোট প্রায় ২ কোটি টাকার নগদ উপহার!
এতেই শেষ নয়। কনের বাবা ঘোষণা দেন, বরপক্ষকে উপহার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে আরও ২১০ বিঘা আবাদি জমি এবং একটি পুরোদস্তুর পেট্রল পাম্পের মালিকানা। উপস্থিত অতিথিরা তখন অভিভূত হয়ে পড়েন, কেউ কেউ মোবাইল ফোনে সেই মুহূর্ত ধারণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
এই ঘটনার ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ একে ‘প্রেমের সম্মান’ বলে প্রশংসা করছেন, আবার কেউ একে দেখছেন সমাজে সম্পদের বৈষম্য ও পণ প্রথার আধুনিক রূপ হিসেবে।
স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি, তবে কিছু সামাজিক সংগঠন এ ধরনের প্রদর্শনীকে নিরুৎসাহিত করার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের মতে, এমন অতিরঞ্জিত আয়োজন সমাজে ভুল বার্তা ছড়াতে পারে এবং গরিব-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করতে পারে।
তবে বর ও কনের পরিবারের দাবি, এটি একান্ত পারিবারিক ব্যাপার এবং কোনো ধরনের পণ গ্রহণ বা প্রদানের উদ্দেশ্য এতে ছিল না। তারা চান, সমাজে সম্পদের ইতিবাচক ব্যবহার নিয়েই আলোচনা হোক।
এই ঘটনাটি একদিকে যেমন উৎসবের আনন্দে রঙ ছড়িয়েছে, তেমনি সমাজে বিতর্কের ঢেউ তুলেছে—উপহার কি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ, নাকি সামাজিক স্ট্যাটাসের প্রতিযোগিতা? প্রশ্নটি থেকেই যাচ্ছে।