উচ্চতর গ্রেড নিয়ে ১৫ লাখ চাকরিজীবীর জন্য সুখবর

0


 বাংলাদেশে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য এসেছে এক বড় ধরনের সুখবর। প্রায় ১৫ লাখ কর্মচারীর উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিত করতে সরকার নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রশাসনিক পুনর্গঠন এবং জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা গ্রেড উন্নয়নের দাবি এবার বাস্তবায়নের পথে। এই সিদ্ধান্তের ফলে একদিকে যেমন কর্মীদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে, তেমনি কর্মক্ষেত্রে উৎসাহ ও উদ্যম বাড়বে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।


সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন একই পদে কর্মরত রয়েছেন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো প্রমোশন পাননি, তাঁদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উচ্চতর গ্রেডে উন্নীত করা হবে। এ উদ্যোগের ফলে বিশেষ করে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা সরাসরি উপকৃত হবেন।


প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, "বহু বছর ধরে একই গ্রেডে থেকে চাকরি করা কর্মচারীরা অনেক সময় অবহেলিত ও হতাশ হয়ে পড়েন। এই উচ্চতর গ্রেড প্রদানের মাধ্যমে তাঁদের প্রাপ্য মর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।"


সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ২২ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ১৫ লাখ কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে প্রমোশন ছাড়াই কাজ করছেন। তাঁদের উচ্চতর গ্রেডে উন্নীত করার মাধ্যমে মাসিক বেতনে গড়পড়তা ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়তি আয় হবে। ফলে জাতীয় অর্থনীতিতেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


সরকারি এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠন। বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের এক নেতা বলেন, "এটি আমাদের দীর্ঘদিনের দাবির বাস্তবায়ন। আমরা চাই দ্রুত এই প্রক্রিয়া শুরু হোক এবং কোনো হয়রানি ছাড়া স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সব কর্মচারী যেন উচ্চতর গ্রেড পান।"


অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা যায়, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি কাজ শুরু করেছে। খুব শিগগিরই একটি গাইডলাইন প্রকাশ করা হবে, যেখানে কারা কারা এই সুবিধা পাবেন, কীভাবে আবেদন করবেন এবং কী প্রক্রিয়ায় মূল্যায়ন হবে—সবকিছু বিস্তারিতভাবে উল্লেখ থাকবে।


সব মিলিয়ে বলা যায়, এই সিদ্ধান্ত সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে নতুন উদ্যম জাগাবে এবং প্রশাসনে কাজের গতি আরও বাড়াবে। একই সঙ্গে এটি সরকার ও কর্মচারীদের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নের দিকেও একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


এই উদ্যোগ যদি সফলভাবে বাস্তবায়ন হয়, তাহলে দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান ঘটবে এবং সরকারি সেবা খাতেও এর প্রতিফলন দেখা যাবে।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top